খুন

‘রামধনু ‘ এপার্টমেন্টে সবে দিন পনেরো এসেছে কুন্তলরা। বেশ কিছুদিন ধরেই কথা চলছিল, কিছুতেই আর সব ঠিক হচ্ছিল না। অবশেষে এই মাসের প্রথমেই একটা শুভ দিন দেখে গৃহপ্রবেশ করে উঠে এলো ওরা। ওরা মানে কুন্তল, রিয়া আর ওদের দুবছরের একমাত্র ছেলে বিসকুট। আসার পর দিন কয়েক ঝড়ের মতোই কাটল ওদের। একটু গুছিয়ে নিয়ে রিয়া আবার ছেলেটাকে নিয়ে বাপেরবাড়ি চলে গেল কিছুদিনের জন্য, শাশুড়িমা হঠাৎই অসুস্থ হওয়ায়। আজ ছুটির দিন তার উপর একা, বেশ খানিকটা দেরিতেই উঠলো ও। ফ্ল্যাটের বারান্দাটা দিয়ে সামনের বিশাল মাঠটা দেখা যায়, তেমনি সুন্দর হাওয়া। সামনেটা খোলা থাকায় আর ফ্ল্যাটটা খুব একটা ছোট না হওয়ায় বেশ খোলামেলা আলো হাওয়া যুক্ত পরিবেশ, হ্যাঁ মেন রোড থেকে খানিক দূরে বটে, কিন্তু চারপাশের এত সবুজ দেখে চোখ দুটো সত্যি আরাম পায়। শহরের ইট কাঠ পাথরের ধূসরতা ছাড়িয়ে বেশ খানিকটা দূরে এই ‘রামধনু’। এখনো সবার সাথে সেভাবে আলাপের সুযোগ হয়নি ,গৃহপ্রবেশটাও ঘরোয়া ভাবেই হয়েছে আত্মীয় স্বজন বা কাছের বন্ধু বান্ধব নিয়ে। সামনেই বিসকুটটার জন্মদিন আসছে, তখন একটা বড় করে অনুষ্ঠান করলে হয়। রিয়া ও বলছিল। সবার সাথে আলাপ ও হয়ে যাবে। ওদের সামনেই একজন থাকেন, নামপ্লেটে লেখা শুধু ‘চৌধুরী’,  অথচ এদের এই কদিন এ ক’বার চোখে দেখেছে কর গুনে বলা যাবে। রিয়াকে একবার ফোনটা করে নিয়ে কফি বানিয়ে আমেজ করে ব্যালকনিতে রোদে বসলো কুন্তল, চেয়ারটা টেনে। সামনেই একটা ক্লাব আছে, দেখেছে ও। আজ একবার গেলে হয়। একটু একটু করে তো এবার এখানেই আড্ডা জমাতে হবে। পুরোনো পাড়া কে তাই বলে ভুলবে না, নিজের আদি বাড়ি, ওর বেড়ে ওঠা , সমস্ত বন্ধু বান্ধব সব তো ওখানেই। নেহাত জয়েন  ফ্যামিলিতে এত অশান্তি তাই বেরিয়ে এলো, নয়তো ওখান থেকে আসার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে ছিল না কুন্তলের। মায়ের যে মন খারাপ তা ও ভালো করেই জানে, কিন্তু এছাড়া আর তো কোনো উপায় ও ছিল না। কফিকাপে চুমুক দিতে দিতেই মুঠোফোনটা বেজে উঠল। রাতুলদা ফোন করছে, এখানে আসার পর থেকে আর সেভাবে কথা হয়নি ,রাতুলদার সাথে কুন্তলের সম্পর্ক খুবই ভালো ,স্মিত হেসে ফোনটা ধরল ও।

**********

অটোস্ট্যান্ডে প্রায় ১৫ মিনিট ধরে দাঁড়িয়ে আছে কুন্তল। মেট্রো থেকে নেমেছে আরো মিনিট পাঁচেক আগে। এখনো একটা অটো পেলো না। ঘড়িটা একবার দেখলো ও, সাড়ে ৭ টা বাজতে চললো ,বাড়ি পৌঁছে সমস্ত ব্যবস্থা ও করতে হবে। রিয়া বিস্কুট কে নিয়ে কাল আসবে, তাই হেল্প করার ও কেউ নেই। রাতুলদারা এমন ধরল, কিছুতেই আর কাটাতে পারলো না ও। ওরা আজ ফ্ল্যাটে চলে আসবে ৯ টা নাগাদ। তার আগে চিকেন কিনে সব জোগাড় করে গুছিয়ে রাখার কথা ওর। ফ্ল্যাটটা একটু পরিষ্কার ও করতে হবে। বিরক্ত হয়ে এদিক ওদিক করতেই অবশেষে এসে গেল অটো। লম্বা লাইন পেরিয়ে যখন ও অটোয় উঠলো তখন ৭.৩৫ প্রায়।

**********

চিকেনটা ম্যারিনেট করে রাখতে রাখতেই আবার বাজল ফোনটা। হাতটা কোনোক্রমে ধুয়ে ফোনটা ধরতে গিয়ে দেখল মা। এখন মায়ের সাথে কথা বলতে শুরু করলে আধ ঘন্টার ধাক্কা। তার চেয়ে বরং এখন থাক, সব মিটলে ফোন করে নেবে। দ্রুত হাতে ঘরটা পরিষ্কার করছিল, ওরা যাওয়ার পর আবার ঘর দোর পরিষ্কার করতে হবে এক প্রস্থ। নয়তো রিয়া যা অশান্তি করে এসব নিয়ে। আর একটু পর থেকে পাকোড়া ভাজা শুরু করে দেবে ও, তাহলে রাতুলদারা আসতে আসতে ওর ভাজা প্রায় শেষ হয়ে যাবে। জলের জগ আর বোতল গুলো খালি দেখে ভরতে গিয়েই মাথায় বাজ পড়লো কুন্তলের। ফিল্টার কাজ করছে না। এটার আবার কোনো প্রব্লেম হলো নাকি ? কি করবে এবার? আর কিছুক্ষণ পর তো চলে আসবে ওরা আর ফ্ল্যাটে আধ বোতল খাওয়ার জল পড়ে আছে, কল থেকে জল নিয়েও চালাতে পারবে না এত আয়রন সেই জলে। কি করবে এবার? ওদের কি জল কিনে আনতে বলে দেবে? নাকি ও গিয়ে কিনে নেবে ,কিনতে গেলেও তো অনেকটা যেতে হবে। উফফ! এখানে তো কাউকে তেমন চেনেও না যে কারো ফ্ল্যাট থেকে জলটা ভরে আনবে। ফিল্টারটা ঠিক না হওয়া অবধি তো খুব মুশকিল। সাত পাঁচ ভেবে একটা ফাঁকা বোতল হাতে নিয়ে বেরোলো ও। তেষ্টাও পেয়েছে, নীচের ওয়াচম্যানকে বলে জল বানানোর ব্যবস্থা করা যায় কি না দেখা যাক। দরজা বন্ধ করে নীচে নামল কুন্তল।

**********

ওয়াচম্যানের সাথে কথা বলে আর কিছু খাবারের অর্ডার দিয়ে লিফটে ঢুকল কুন্তল।আরো দুজন ছিল,পরিচয় হলো এই প্রথম, তারা থার্ড আর ফোর্থ ফ্লোরে নামল। যাক গে, আর কোনো চিন্তা নেই তাহলে। ওরা আসতে আসতে পকোড়াটা ভেজে নেবে ও। লিফটের দরজা খুলতে বেরোতে গিয়েই হোঁচট খেলো কুন্তল। লনের বড় আলোটা কেটে গেল নাকি? ও যখন বেরিয়েছিল তখন তো জ্বলছিল ওটা। আলো আঁধারে সুইচবোর্ড টা অনভ্যস্ত হাতে হাতড়াচ্ছিলো ও, তখনই শব্দটা এলো কানে। এক সেকেন্ডের জন্য হলেও বুকটা ধড়াস করে উঠল ওর, আলো আঁধারে কিরকম যেন একটা আবছা অবয়ব, আওয়াজটা সেখান থেকেই আসছে। কেমন যেন একটা গোঙানির আওয়াজ। মাথা মুন্ডু কিছুই বুঝতে পারছে না কুন্তল। এই ফ্লোরে তো ও আর ওই সামনের ফ্ল্যাটের ওই চৌধুরী , ব্যাস ! বুকের ভিতর হাতুড়ি পিটছিল, ওই গোঙানিটা তীব্র থেকে তীব্রতর হলো মুহূর্তের মধ্যে। আর কিছু বোঝার মতো অবস্থা নেই ওর, যেভাবে হোক ওকে ওর ফ্ল্যাটে ঢুকতে হবে। অবশেষে হাতের আঙ্গুলটা সুইচ এর গায়ে লাগল, জ্বালিয়ে দিল কুন্তল আলোটা।  আলোটা জ্বলতেই আরো এক প্রস্থ অবাক হওয়ার পালা। ওর সামনে দাঁড়িয়ে প্রায় ৬ ফুট লম্বা দীর্ঘদেহী মাঝবয়সী একজন ভদ্রলোক। সম্ভবত এই-ই চৌধুরী। একে ও দেখেছে মনে হচ্ছে। কিন্তু কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ও বুঝল ইনি মোটেই স্বাভাবিক অবস্থায় নেই। রীতিমতো টলছেন। ঘ্রানেন্দ্রিয় ও ততক্ষণে জানান দিয়ে দিয়েছে। কুন্তল আর বেশি দেরি না করে তাড়াতাড়ি হাতটা ধরল ভদ্রলোকের। ভদ্রলোক এই অবস্থায় ঠিক করে দরজার লক টাও দেখতে পাচ্ছেন না যে দরজা খুলে ভিতরে বসবেন। এই অবস্থায় এটুকু সাহায্য তো মানুষটাকে করা উচিত। কুন্তল যে নতুন প্রতিবেশী সেটা উনি ভালোই জানেন ,এই অবস্থাতেও নমস্কার জানাতে ভুললেন না। যাই হোক, ভদ্র মানুষ সেটা ব্যবহারেই বোঝা গেল।

“আমি চাবি খুলে দিচ্ছি ,আপনি আমায় চাবিটা দিতে পারেন।”

ভদ্রলোক মৃদু হেসে চাবিটা কুন্তলের হাতে তুলে দিলেন, কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই দরজা খুলে দিলো কুন্তল।

“নিন ,ভিতরে গিয়ে বসুন ,কোনো অসুবিধা হলে ডাকবেন ,আমি আপনার পাশের ফ্ল্যাটেই আছি। “

“থ্যাংকস, কিন্তু একটু প্লিজ বসুন এসে , আসলে একা থাকি তো ,একটু বেশি খাওয়া হয়ে যায় মাঝে মধ্যে, প্লিজ এসে বসুন একটু, আলাপ টাও হয়ে যাবে। “

ওর নিজের ঘরে এখনো কাজ বাকি পড়ে আছে, আর কিছুক্ষণের মধ্যেই রাতুলদারাও চলেও আসবে, বেশি বসার সময় একেবারেই নেই, কিন্তু ভদ্রলোক এত করে বলতে লাগলেন যে না বসে পারল না আর। অভদ্রতা ও তো করা যায় না , খানিক বাধ্য হয়েই ভিতরে ঢুকে বসল ও। বসার জায়গাটা এত সুন্দর করে সাজানো যে তাক লেগে যাবার জোগাড়। ঝাঁ চকচকে ঘরের মেঝে থেকে ছাদ, ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন চোখ জোড়ানো, বসার সোফাটার পিছনে জ্বলজ্বল করছে ধ্যানমগ্ন শিবের ছবি। হাঁ করে তাকিয়ে ছিল কুন্তল। পরিপাটি করে সাজানো সবটুকু, মাথার উপর জ্বলজ্বল করছে ছোটোখাটো একটা ঝাড়বাতি। ঘরের প্রতিটি কোণে চাকচিক্য স্পষ্ট। ও সোফায় বসতে বসতেই রান্নাঘরের দিকে গেলেন ভদ্রলোক। কুন্তল এদিক ওদিক দেখছিল আর উসখুস করছিল। মোবাইলটাও সাথে আনেনি, ঘড়ির দিকে তাকাল একবার। ভদ্রলোক ফিরলেই এবার উঠতে হবে। কিন্তু আর কেউ নেই? উনি যে একা থাকেন তা তো এই ফ্ল্যাটের অবস্থা দেখে মনে হয় না। একা একজন পুরুষের পক্ষে এতটা গুছিয়ে মোটেই সম্ভব না। ওর ভাবনার মাঝেই ফিরে এলেন আবার ভদ্রলোক, হাতে দুটো সরবতের গ্লাস নিয়ে। বাইরে যে অবস্থায় ছিলেন তার থেকে একটু বেটার মনে হলো এখন।

“এই আমি না এবার উঠি, আসলে সত্যিই তাড়া আছে, আমি আরেকদিন আসব, জমিয়ে আড্ডা দেওয়া যাবে।”

“আরে বসুন বসুন ,শরবতটুকু খেয়ে যান। আর কিছুই নেই তেমন বাড়িতে এখন। আসলে একা থাকি তো। “

একটু হোঁচট খেল কুন্তল। সরবতের গ্লাসে অনিচ্ছাসত্ত্বেও চুমুক দিতে দিতে প্রশ্ন করলো ও ,” আপনি একাই এত গুছিয়ে সাজিয়ে থাকেন? ভাবাই যায় না তো। আপনার ফ্যামিলি…”

“নেই, মানে এখন তো টাকা ফেললেও বিশ্বাসী লোক পাওয়া যায় না, তবে একটা ছেলে আছে, খুব ভালো , আমায় খুব ভালোবাসে, শ্রদ্ধা করে, দিনরাতের লোক, এই কদিনই নেই, দেশে অনুষ্ঠান আছে তাই কদিন ছুটিতে আছে। ওই গুছিয়ে সাজিয়ে রাখে সব। একা আছি তাই আজ একটু বেশি খেয়ে ফেলেছিলাম আসলে। তা আপনার নামটাই তো জানা হলো না।”

একটু একটু করে ভদ্রলোকের সাথে আলাপ জমছিল, ভদ্রলোক খুব একটা মন্দ না, নাম দেবীপ্রসাদ চৌধুরী, কথাবার্তা রীতিমতো মার্জিত, মাথায় কাঁচা পাকা চুল, ক্লিন শেভড, উজ্জ্বল শ্যামবর্ণ, চোখে দামি ফ্রেমের চশমা, হাতের চার আঙুলে চারটে আংটি, চোখের দৃষ্টি দেখেই বোঝা যায় কেমন যেন অস্বাভাবিক রকমের স্বাভাবিক, পরনে ঢিলে ঢালা পাজামা পাঞ্জাবি, চেহারা অল্প স্থুলাকৃতি, লম্বা। আদপে উনি ব্যবসায়ী মানুষ, বড়বাজারে বিশাল দোকান। কথাবার্তার সাথে সাথেই চোখ ঘোরাচ্ছিল কুন্তল ফ্ল্যাটের এদিক ওদিক। ছোট্ট তাকের উপর সাজানো ফটোফ্রেমে চোখ গেল ওর। একটা ফ্যামিলি ফটো।

“আমার স্ত্রী আর আমার মেয়ে। এটা প্রায় বছর পনেরো আগের ছবি। তখন বেনারসে থাকতাম , চাকরি করি তখন। ওখানকার কোয়ার্টার এ তোলা, তখনও এখানে আসিনি। ”  

অনেকগুলো প্রশ্ন ঘুরছিল এবার কুন্তলের মাথায়, কি ভাবে জিজ্ঞাসা করবে আদৌ জিজ্ঞাসা করা উচিত হবে কিনা বুঝতে পারছিল না ও। ভদ্রলোকের চোখ দুটো পড়ার চেষ্টা করছিলো শুধু। কিছু বললো না আর। গ্লাসে চুমুক দিতে দিতে দেবীবাবুই বললেন ,”আসলে একটা সমস্যায় পড়েছি জানেন। এখন একা আছি, কি করব বুঝতেও পারছি না। আপনাকে পেয়ে ভালোই হলো। আসলে ছেলেটাও নেই, বললাম না দেশে গেছে, অনুষ্ঠান আছে, নয়তো ওই-ই সাহায্য করতো। এমনিতে তো ও খুব কাজের ছেলে। “

ভদ্রলোক বেশ ইতস্তত করছিলেন, সেইটা দেখে কুন্তল বললো ,” আরে আপনি বলুন না। আমার সাধ্যে হলে নিশ্চয় সাহায্য করব। “

ভদ্রলোক যেন খানিক আশ্বস্ত হলেন, বললেন ,” একটা ফেভার চাই, আসলে ডেডবডিগুলো কোথায় লুকোবো বুঝতে পারছি না। ”  

সরবতটা শেষ করে গ্লাসটা রাখতে গিয়েই মারাত্মক বিষম খেলো কুন্তল। কি বলছে লোকটা ! নেশা করে মাথার ঠিক নেই নাকি? দেবীপ্রসাদ চৌধুরীর দিকে তাকাল একবার, শান্ত হিমশীতল চোখ। যেন ভুল তো কিছু বলিনি। কুন্তলের গলা শুকিয়ে যাচ্ছিল এবার। গ্লাসটা টেবিলে ঠিক করে রেখে দিল ও, উঠে বেরিয়ে যাবে ? এসব পাগলের আড্ডায় না থাকাই মঙ্গল। কিভাবে চেয়েও আছে যেন লোকটা। না আর বেশি ভাবার দরকার নেই। উঠতে যেতেই আবার বললো চৌধুরী, “আসলে লুকিয়েছি তো এইখানেই। কিন্তু তাও ঠিক ভরসা পাচ্ছি না। আপনি বরং একবার ডেড বডি গুলো খুঁজে দেখুন ,আপনি না পেলে নিশ্চিন্ত। আসলে খুন করার সময়ে তো এত ভেবে করিনি, এখন জায়গা নিয়ে অসুবিধায় পড়ে গেছি, এত গুলো বডি, পূর্ণ বয়স্ক সব, লুকোনো তো চাট্টিখানি কথা নয়। আপনি বরং দেখুন, কিছু দেখতে পেলেই বলবেন, রক্তের দাগ বা অন্য যা কিছু সন্দেহজনক। তাহলেই একটু নিশ্চিন্ত হতে পারি। “

“কতগুলো… মানে আপনি কি… “

“তিনটে… আমার স্ত্রী, মা আর মেয়ে। এই তো ছবি দেখলেন, মায়ের তো ছবিই নেই, তাই আর দেখাতে পারলাম না। ” স্বাভাবিক স্বরে কথা গুলো বলে গেল চৌধুরী। কুন্তল ততক্ষণে ঘামতে শুরু করেছে, কপালটা হাত দিয়ে মুছে নিয়ে উঠে পড়ল ও, এখানে আর বসা উচিত হবে না। মোবাইল টাও রেখে এসেছে ও ফ্ল্যাটে, কি করবে ও এবার ? এখান থেকে ওকে বেরোতেই হবে যে করে হোক।

ও আর না দাঁড়িয়ে দরজার দিকে এগোল তাড়াতাড়ি।  

“লাভ নেই, দরজা লক, চাবি আমার কাছে, আপনি বৃথাই ভয় পাচ্ছেন কিন্তু মশাই, আমি আপনার কোনো ক্ষতি করবো না, আপনি শুধু আমায় একটু সাহায্য করুন। প্লিজ একটু ঘুরে দেখুন, যদি কিছু দেখতে না পান, তাহলে তো মিটে গেল, আর যদি পান, আমায় আবার ব্যবস্থা করতে হবে, নিন নিন তাড়াতাড়ি দেখে নিন, তারপর আপনার ও ছুটি আর আমার ও ছুটি। “

“দেখুন, আমার অসহ্য লাগছে এই ইয়ার্কি, আপনি দরজাটা খুলবেন না আমি লোক ডাকবো ?”

আর শান্ত থাকতে পারল না কুন্তল। ওর অজান্তেই ওর গলা চড়তে শুরু করেছে এবার। দেবীপ্রসাদ তখন ও নিরুত্তাপ। সেইভাবেই বললো,” ডাকতে চাইলে ডাকতেই পারেন। আমার কোনো অসুবিধা নেই। এমনি ও কেউ আসবে না অমনিও কেউ আসবে না। তার থেকে বরং আমার কাজটুকু করে দিন ,এমনিই আমি দরজা খুলে দেব।” এটুকু বলে আড়াল থেকে রিভলভারটা বের করে রাখল পাশে। কুন্তলের মেরুদন্ড দিয়ে একটা ঠান্ডা স্রোত বয়ে গেল এবার ,ও বুঝলো এ কোনো মাতাল বা পাগল আদৌ নয়। ইনফ্যাক্ট বড়সড় একটা ঝামেলায় ফেঁসে গেছে ও, আর চিৎকার চেঁচামেচি করে লাভ হবে না কিছুই। এক যদি ওর বন্ধুগুলো এসে ওকে খুঁজে না পেয়ে কিছু করতে পারে, ওরা না আসা অবধি ওর এখান থেকে নিস্তার নেই। বুকের ভিতর অসম্ভব জোরে যেন কেউ হাতুড়ি পিটছিল ওর। দূর দুরান্তেও ভাবতে পারেনি ও এইরকম কিছু ঘটতে পারে ওর সাথে। একটা সাধারণ লোক, আপাত দৃষ্টিতে দেখে যার মধ্যে কোনো অস্বাভাবিকতা চোখে পড়ে না, সে এতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে কল্পনাও করতে পারছে না ও। লোকটা তিন -তিনটে খুন করেছে ! কুন্তল কেও কি শেষ করবে এবার, হাত পা এতক্ষণে ঠান্ডা হয়ে গেছে ওর। কি বলবে আর কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না ও। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। ওর চোখের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে লোকটা।ওই দৃষ্টির দিকে তাকালেই যেন রক্ত ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে ওর, নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করল ও , যেভাবেই হোক এখন থেকে বেরোনোর রাস্তা বের করতে হবে, নয়তো ওকেও যেকোনো মুহূর্তে শেষ করে দিতে পারে। আমতা আমতা করে বললো,” আমি কি ভিতরের ঘর গুলোয় যাবো মানে আপনি যা বললেন খুঁজে… “

“হ্যাঁ হ্যাঁ যান, নয়তো খুঁজবেন কি ভাবে, ওই তো ঐদিকে, সামনেই দরজা…”

আর দেরি না করে সামনের বেডরুমটায় ঢুকে গেলো কুন্তল, জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছিল ও। এই ঘর থেকেই যে ভাবে হোক এমন কিছু একটা বের করতে হবে যাতে করে এই লোক তাকে কিছুটা হলেও ঘায়েল করা যায়, নয়তো ওই রিভলভার পেরিয়ে ওর পক্ষে বেরোনো অসম্ভব, লোকটার পকেটেই ওর চাবি আছে, উফফ! কেন যে ফোনটা সাথে রাখলো না ও। ঘরের মধ্যে চোখ ঘোরাতে লাগল ও এদিক ওদিক, কিছু অন্তত যদি ক্লু পাওয়া যায়, কাঁচের আলমারিতে বই ভর্তি, কিন্তু বইগুলো দেখেই ওর হাত পা অবশ হয়ে যাচ্ছিল। লোকটা কি সত্যি সত্যি বডিগুলো এই খানেই কোথাও লুকিয়েছে? অন্তত এই সমস্ত বই পত্র বা লোক টার পড়াশুনো তো তাই বলছে। কাঁচের আলমারির পাল্লাটা টেনে বই আর কাগজ গুলো একবার বের করার চেষ্টা করল কুন্তল। এরকম অসংখ্য বইয়ে ভর্তি পুরো তাক, টেবিল, গোটা আলমারি। দমবন্ধ লাগছিল কুন্তলের। জানলাটা লক, এটা খুলে বাইরে থেকে কাউকে কি ডাকার চেষ্টা করবে? ঘরের দরজাটা লক করে দিলেই তো হয়। জানলা দিয়ে একবার বাইরেটা দেখে নিরাশ হলো ও, এটা বাইরের দিক, সামনে ধু ধু ফাঁকা মাঠ, এত রাত্রে মাঠেও কেউ নেই আর, ওর চিৎকার ও কেউ শুনতে পাবে না, তাও একবার চেষ্টা করে দেখলে হয়। দরজাটা লাগাতে গিয়েই থমকে গেল ওর হাতটা, দরজার লকটা তো ভাঙাই, তার থেকেও বড় কথা দরজার পিছনে এসব কি লেখা ! নিছকই আঁকি বুঁকি তো নয় এগুলো। কিছু বুঝতে পারছে না এবার কি করবে ও ! ঘরে একটা ল্যান্ডলাইন বা মোবাইল ও কি নেই? ওই…ওই তো, চৌধুরীর সামনে রাখা টেবিল টাতেই একটা এন্টিক টাইপের টেলিফোন রাখা, ঘরের সাজের সাথে সামঞ্জস্য রেখে। চলে কি না সেটা যদিও জানা নেই। আচ্ছা ওর বন্ধুগুলো কি এখনো এলো না, হয়তো এসেছে, ওকে খুঁজে হয়তো ফিরেও গেলো। মাথায় অসহ্য যন্ত্রনা করছে এবার। ও যদি বাইরে গিয়ে বলে ও কিছু খুঁজে পায়নি তারপর কি এই লোকটা ছেড়ে দেবে? কখনোই নয় ,ওকেও একই ভাবে শেষ করে একই ভাবে বডি গায়েব করে দেবে। একদম মাথা কাজ করছে না। এদিক ওদিক করতে করতেই চোখে একটা ভারী পিতলের ফুলদানি চোখে পড়ল। এটা দিয়ে লোকটার মাথায় মেরে যে ভাবে হোক ঘায়েল করা সম্ভব। হাত পা ইতিমধ্যে রীতিমতো কাঁপতে শুরু করে দিয়েছে ওর। বাইরের দিকে উঁকি দিয়ে তাকালো একবার ও। কোনো সাড়া শব্দ করছে না লোকটা, চুপচাপ বসেই আছে এক জায়গায়। এটাই সুযোগ। আর দেরি না করে কাঁপা কাঁপা হাতে নিঃশব্দে ফুলদানিটা হাতে তুলে নিলো ও। আচ্ছা আঘাতে লোকটা যদি মরে যায়? কিন্ত এছাড়া আর তো বাঁচার কোনো উপায় ও নেই ওর কাছে। লোকটার দিকে ধীর পায়ে এগোতে লাগলো ও। পারলে নিজের শ্বাসটুকুও বন্ধ রাখে ও, পাছে কোনো শব্দ হয়, লোকটা একবার ও যদি বুঝতে পারে, ওই গুলি ওর বুক এফোঁড় ওফোঁড় করে বেরিয়ে যাবে সেটা ও ভালোমতো জানে। কিন্তু কিছুটা এগোনোর পরই বুঝল ও কত বড় ভুল করে ফেলেছে, ওর প্রতিবিম্ব সামনের আয়নায় স্পষ্ট, আর আয়নাটা ঠিক চৌধুরীর সামনে। ব্যাস ! শেষ এবার ও ! ওর চারপাশটা যেন এক নিমেষে অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে একটু একটু করে। জীবনের শেষ মুহূর্তে কি এরকমই হয় ? সত্যিই তাহলে ওর আর বাঁচার আশা নেই? আর দাঁড়াতে পারলো না কুন্তল, সারা শরীর যেন অসম্ভব হালকা হয়ে গেছে, পা দুটো রীতিমতো কাঁপছে। লুটিয়ে পড়লো ও মাটিতে।

**********

চোখ দুটো এত ভারী যে অতিকষ্টে খুলতে পারল কুন্তল, প্রথমে চোখ দুটো খুলে কিছুই বুঝতে পারছিল না ও। কোথায় কখন কিভাবে প্রশ্নগুলো নিজের মনে হাতড়াতে হাতড়াতেই ধীরে ধীরে সব মনে পড়ে গেলো ওর। তার মানে ও এখনো বেঁচে আছে? এটুকু বুঝতেই যেন জীবনীশক্তি ফিরে পেলো ও, মাথার উপর ঝাড়বাতিটার দিকে তাকাল একবার। নিজের ভিতরের সমস্ত শক্তি একত্র করে উঠতে যেতেই বুঝতে পারলো ফুলদানিতে এখনো ওর হাতেই আছে। উঠে বসলো কুন্তল, সামনের সোফার দিকে চোখ গেলো। চৌধুরী এখনো একই ভাবে বসে। এবার একটু খটকা লাগলো ওর।   ফুলদানিটা হাতে নিয়ে ই এবার সামনের দিকে ঘুরলো ও ,আর…আর ওর চোখ দুটো ঠেলে বেরিয়ে আসতে বাকি রইল শুধু। ও কি স্বপ্ন দেখছে ? নিজের হাতেই চিমটি কাটল ও। নাহ। কি করবে এবার ও? ওর সামনে চৌধুরী বসে রয়েছে, তবে সে তো আর বেঁচে নেই ! হাতের আঙ্গুলটা স্পর্শ করেই দুপা পিছিয়ে এলো এবার কুন্তল। হাত পা বরফ হয়ে গেছে চৌধুরীর, চোখ দুটো আধ বোজা, মুখটা অল্প বিকৃত, এই দেহে যে আর প্রাণ নেই তা বুঝতে বাকি রইল না ওর। দরজার দিকে তাকাল একবার ও, বন্ধ, চাবি কোথায়? হন্যে হয়ে খুঁজতে লাগল ও চাবিটা।  একটা অজানা, অচেনা ফ্ল্যাটে এভাবে ডেড বডি সঙ্গে নিয়ে সারারাত ! উফফ ! আর ভাবতে পারছে না ও। আর এক মুহূর্ত ও থাকবে না ও এখানে। কাঁপা কাঁপা হাতে চৌধুরীকে ছুঁলো ও, এদিক ওদিক হাতড়িয়ে খুঁজতে লাগল ফ্ল্যাটের চাবিটা, ওর হাতের ধাক্কায় চৌধুরীর নিস্তেজ শরীরটা এলিয়ে পড়লো ওরই বাম হাতের উপর। নিজেকে কোনোমতে সামলে আবার খুঁজতে লাগলো চাবিটা। না পাচ্ছে না কোথাও, দরজার কাছে দৌড়ে গিয়ে এবার চিৎকার করলো ও। কেউ কি ওর গলা পেলো শুনতে? আছা চৌধুরী মারা গেলো কিভাবে? ও তো কিছুই করেনি ,ওর হাতে ফুলদানিটা এখনো একইভাবে রয়েছে। এরপর পুলিশ যদি এই খুনের জন্য ওকেই দায়ী করে? বাকি বডি গুলো ও যদি সত্যিই এখানেই থাকে আর পুলিশ যদি সেগুলো পেয়ে যায়? প্রতিটা খুনের জন্য যদি ওকেই দায়ী করে পুলিশ? কি করবে ও তখন? কি ভাবে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করবে ও?  

ও তো খুন করেনি চৌধুরী কে, চৌধুরীর খুনের দায়…কিন্তু চৌধুরী কে খুন করলো কে? নাকি এটা স্বাভাবিক মৃত্যু? কিছু বুঝতে পারছে না কুন্তল। সবটা…সব কিছু গুলিয়ে যাচ্ছে ওর। ফ্ল্যাটের মধ্যেই এদিক ওদিক দৌড়াচ্ছিল কুন্তল। যেভাবে হোক এই বদ্ধ ফ্ল্যাট আর এই মৃতদেহ থেকে নিষ্কৃতি চাই ওর। চোখ ফেটে জল আসছে এবার ওর। এদিক ওদিক করতে গিয়েই সেন্টারে টেবিল টায় হোঁচট খেলো ও। আর তখনই টেবিল এ রাখা চিঠি গুলোয় চোখ পড়লো ওর। সঙ্গে একটা কাগজ, যেটা ওকেই লেখা…   

********** 

ঘটনাটার পর দুদিন কেটে গেছে। কুন্তলের কাছে ওই রাত আজ ও একটা বিভীষিকার মতো। চোখ বুজলে এখনো সেই একই দৃশ্য ভেসে উঠছে বারবার। সেদিনকার ঘটনাটা আর এই জীবনে ভোলা সম্ভব না ওর পক্ষে। তবে ওর উপর যে দায়িত্ব চৌধুরী দিয়েছিল তা ও পূরণ করেছে ইতিমধ্যেই। চিঠিগুলো সঠিক মানুষগুলোর হাতে পৌঁছে দিয়েছে। চৌধুরীর স্ত্রী আর একমাত্র কন্যার হাতে চৌধুরীর লেখা শেষ চিঠি পৌঁছে দিতে পেরেছে কুন্তল। হ্যাঁ , দুটো মানুষই জীবিত, কিন্তু বেঁচে আছে বলা যায় না, জীবন্মৃত এই কাছের মানুষ গুলো জীবনে চলার পথে একা হয়ে গেলো আরো একটু। আর এই একাকীত্ব যে কতটা বিষাক্ত তার দাম নিজের জীবন দিয়ে দিয়ে গেলো দেবীপ্রসাদ চৌধুরী। জীবনে দৌড়াতে গিয়ে নিজের স্ত্রী, সন্তান ও নিজের গর্ভধারিনী মায়ের প্রতি কোনো কর্তব্য পালন করেনি মানুষটা। আর এই আত্মগ্লানিতে দগ্ধ হয়েই আজ এই পরিণতি। নিজের এই কাজের জন্য যেদিন মায়ের মুখাগ্নি করার অধিকার থেকেও বঞ্চিত হয়েছিল সেদিন হয়তো চোখ খুলেছিলো লোকটার। যদি সেদিন একলা বাড়িতে মা না থাকতো, যদি সাহায্যের জন্য একটা হাত থাকতো, যদি ও নিজে মায়ের কাছে থাকতো তাহলে হয়তো মা চলে যেত না এভাবে বিনা চিকিৎসায়। মারা যাওয়ার দুদিন পর দরজা ভেঙে উদ্ধার হয়েছিল বৃদ্ধার মৃতদেহ। যদি একটু থমকে দাঁড়িয়ে ভাবার সময় পেত তাহলে হয়তো নিজের স্ত্রী সন্তান ও এভাবে দূরে সরে যেত না। মাসে মাসে মোটা টাকা, উপহার পাঠিয়ে দায়িত্ববান স্বামী, সন্তান, বাবা হওয়ার চেষ্টায়  কোনোদিন আর ভালো স্বামী, সন্তান, বাবা হওয়া হয়নি। ডাহা ফেল!  একটু একটু করে অবহেলায়, অভিমানে, সময়ের অভাবে নিজের কাছের প্রতিটা মানুষকে, প্রতিটা সম্পর্ককে খুন করেছে এটাই বিশ্বাস করতে শুরু করেছিল দেবীপ্রসাদ চৌধুরী। কেউ টেনে তুলতে পারেনি আর ওই অন্ধকার থেকে, যে মানুষটা জীবনে কোনোদিন কারো হাত ধরেনি এসে তার হাত কে ধরতো? ডাক্তার ওষুধ ও হারলো অবশেষে। নিজেকে শেষ করার সিদ্ধান্তটা নিয়েই নিলো দেবীপ্রসাদ। কিন্তু কাউকে যে প্রয়োজন ছিল সবটা বলার, নিজের অবস্থাটা একটু হলেও উপলব্ধি করানোর, নয়তো মরেও শান্তি পেত না যে লোকটা, তাই চিঠিগুলো কুন্তলের উদ্দেশ্যে রেখে জীবনের থেকে ছুটি নিলো অবশেষে। আর রেখে গেলো সেই রাতের ভয়ঙ্কর মুহূর্ত। ওই ফ্ল্যাটের মধ্যে কাটানো কুন্তলের জীবনের দম বন্ধ করা দেড় ঘন্টা সময়টা রোজ কাটাত দেবীপ্রসাদ। এরকমই বদ্ধ, এরকমই অসহ্য, এরকমই একাকীত্ব আর অনুতাপে দগ্ধ হয়ে, আর এভাবেই শেষ হয়ে গেলো একটা অভিশপ্ত অধ্যায়। আর রেখে গেলো অনেকগুলো প্রশ্ন আমাদের সামনে। যার উত্তর খোঁজা এবার বড্ড দরকার।

তুলিকা রায়ের কলমে দুটি ভিন্ন স্বাদের সেরা উপন্যাস একসাথে মাত্র ৯৯/- টাকায় -

Share with

এরকম আরো কিছু গল্প

মুক্তি

বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে হয়ে গেল, আকাশ তখন থেকে ঠায় বসেই রয়েছে ঘাটে। এখন বাঁধানো ঘাট থেকে করিডোর হয়ে বাবা বিশ্বনাথের মন্দিরে পুজো দেওয়া অনেকটা সহজ

Read More »

বন্ধু হবি চল

বাক্সপেটরা নিয়ে স্টেশনেই বসে ছিল নয়না, বৃষ্টি পড়েই চলেছে, মুষলধারায়। বাবা বলল আরেকটু অপেক্ষা করতে, এত বৃষ্টিতে তো ছাতাও হার মানবে, আর বেরিয়ে রাস্তাও অজানা

Read More »

ক্লিক

।।১।। -“মালিনী, কালকের মিটিংটা কখন ফিক্স করেছ? -“ম্যাম, সকাল ১১টা।” -“ওকে, কনফার্মেশন পেয়ে গেছ?” -“ইয়েস ম্যাম।” -“ওকে গুড। আর।।। এক মিনিট।।।” টেবিল থেকে ফোনটা তুলে

Read More »

শিক্ষা

।।১।। দাপুটে, বদরাগী, মেজাজি এই সব কটা বিশেষণই বেশ ভালো যায় মিসেস বোসের সাথে। রেণুকা বোস আর অমরনাথ বোস সানফ্লাওয়ার এপার্টমেন্টে ১২০০ স্কোয়ারফিটের ফ্ল্যাট 2c

Read More »

বিদায়

।। ১।। রীতিমত জোর করেই নন্দিনীকে পাহাড়ে নিয়ে এলো সঙ্গীতারা। আসার ইচ্ছে তো ছিল না ওর একদমই, শরীর সাথ দিলেও মনটা কোনোভাবেই সাথ দিচ্ছে না।

Read More »

মামাবাড়ি

।।১।। একবার নিজের ঘড়িটা স্টেশনের ডিজিটাল ঘড়ির সাথে মিলিয়ে নিল মিনি, সময় তো হয়ে গেছে। উল্টো দিকের দুটো মেট্রো এসে গেল কিন্তু এদিকের মেট্রোর কোনো

Read More »

Share with