“কী গো ওঠো, ৭:৩০ টায় ফ্লাইট, এখন না উঠলে মিস হয়ে যাবে কিন্তু |”
সাউথ সিটির বিলাস বহুল এপার্টমেন্টের একটি ৩ বি.এইচ.কে ফ্ল্যাটে এখন চূড়ান্ত ব্যস্ততা | রেডি হতে হবে, খেয়ে বেরতে হবে, ছুটতে হবে, আশপাশ দেখার সময় এখন কোথায় মিঃ আর মিসেস লাহিড়ীর |
আজকের ফ্লাইটেই একজন সিঙ্গাপুর – একজন চীন পৌঁছবে, অবশ্যই নিজেদের কাজে | তাই এখন সময় কোথায় |
“মানদা মাসি…” হাঁক পাড়ল অমৃতা | তিতাসকে এখন ডাকার দরকার নেই |
“যেগুলো বলেছি মনে আছে তো?”-অমৃতা |
“আজ্ঞে হ্যাঁ গো মেমসাবেব |”- ঘাড় নেড়ে আশ্বস্ত করে মানদা, বিশ্বাসী ও অনেক পুরানো কাজের লোক | সেই পুরনো তালতলার বাড়ি থেকেই আছে, তিতাস বলা যায় মানদার কাছেই মানুষ |
চটপট রেডি হয়ে, খেয়ে, লাগেজ নিয়ে বেরিয়ে পড়ে অমৃতা ও অখিলেশ | গাড়িতে যেতে যেতে অখিলেশ বলে,” তিতাসকে ম্যানেজ করলে কী করে, ও ঝামেলা করেনি ?”
অমৃতা-“আরে ওকে বললে ও ছাড়তো? তার থেকে ঘুম থেকে উঠে যখন অত গিফ্ট দেখবে, তখন এমনিই মন ভাল হয়ে যাবে | তুমি ওসব নিয়ে ভেবো না |”
গাড়ি দ্রুত গতিতে ছুটে চলল এয়ারপোর্টের দিকে |
***************
“তিতি সোনা ! আমার তিতি সোনা ! উঠে পড় সোনা এবার | দেখো দিদু কী এনেছে তোমার জন্য |”
“উফফ” ঘুম জড়ানো চোখে তাকাল তিতাস মানদা দিদুর দিকে |
“ফুলকো লুচি আর আলুর দম ! জাস্ট ওয়াও ! তুমি বানিয়ে আনলে? মা দেখলে বকবে না?” মুখ চোখ পছন্দের খাবার দেখে ঝলমল করছে তিতাসের |
“আজ যে সোনার জন্মদিন আর আমি বানাবো না? তা হয় নাকি | ওই কীসব বলে.. হেপি বাড্ডে |”, বলে তিতাসের কপালে চুমু খেল মানদা |
“ওহ থ্যাংক ইউ সো মাচ মাই সুইট দিদু |”- তিতাস |
“যাও হাত মুখ ধুয়ে এস চট করে, লুচি ঠান্ডা হয়ে যাবে |”- মানদা |
ঝটপট ফ্রেশ হয়ে লুচি নিয়ে মুখে পুরল তিতাস | ইস কতদিন পর খাচ্ছে | উফ, স্বর্গীয় স্বাদ |
মানদা বললো,”ওই দেখ মা বাবা কী সুন্দর সুন্দর সব গিফ্ট রেখে গেছে তিতাসের জন্য |”
তিতাস জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে,”রেখে গেছে মানে? মামমাম বাপি নেই?”
না সোনা, জরুরি কাজে আজ ভোরেই ওদের যেতে হলো | তাড়াতাড়ি চলে আসবে, তুমি মন খারাপ করো না | তুমি বরং দেখ কী দিল মা বাবা |”- মানদা |
“দিদু আমার বার্থডেটা তো আর দু’দিন পর ফিরে আসবে না, আজকের দিনটা আর ফিরে আসবে না | আগের বার মা কথা দিয়েছিল, এই বার্থডেতে থাকবে |”-তিতাস |
এমন সময় ফোন বেজে উঠল | মা-র ফোন | তিতাস ফোনটা ধরল,” হ্যালো “|
ওপাশ থেকে, “হ্যাপি বার্থডে মাই বেবি | গিফ্ট পছন্দ হলো?”
তিতাস- “দেখিনি এখনো |”
অমৃতা- “সে কী? দেখো তোমার জন্য সারপ্রাইজ আছে |”
মুখে নকল হাসি ফুটিয়ে তিতাস বলল,”ঠিক আছে দেখছি, এখন রাখি?”
মা ওপাশ থেকে- “ওকে বেটা ! টেক কেয়ার, বাই |”
তিতাস ফোনটা রাখল, মুখে একরাশ হতাশা | মা বাবার কী একটুও সময় নেই আমার জন্য? রাংতায় মোড়া মেকি ভালবাসার দিকে তাকাল তিতাস, আর সেই উচ্ছাসটাই নেই | এইগুলোই যদি মা সামনে দাঁড়িয়ে থেকে বলতো, নিজে ওর হাতে গিফটগুলো তুলে দিত, তাহলে কী খুব অসুবিধা হতো?
খুলল তিতাস মোড়কগুলো, “ও মাই গড! চাবি, গাড়ির চাবি, যেটা তিতাস বায়না করে ছিল এতদিন ধরে | ওয়াও ! আর এটা কী? উফফ! ডায়মন্ড সেট ! জাস্ট মাইন্ড ব্লোয়িং, দুর্দান্ত |” এক নিমেষে দুটো দামি গিফ্ট পেয়ে তিতাস মনের দুঃখটা ভুলে গেল কিছুক্ষণের জন্য, যেটা মিঃ ও মিসেস লাহিড়ী চেয়েছিলেন |
একে একে বন্ধুদের বার্থডে উইশও আসতে লাগল | তিতাস এখন খুব খুশি | বন্ধুরা ওর জন্য একটা পার্টির আয়োজনও করেছে, রাত অবধি পার্টি চলবে | মানদা দিদাকে বলে দিল যে ফিরতে রাত হবে |
সন্ধ্যা নামতেই রেডি হয়ে ওর নতুন গাড়িটা নিয়ে বেরিয়ে পড়ল তিতাস | এটা ওর ১৮ তম জন্মদিন |
পার্টিতে পৌঁছতেই সবাই ওর চোখ ধাঁধানো গিফ্টগুলো দেখে তারিফ করতে লাগল | কেউ কেউ বলল,”তিতাস ইউ আর রিয়েলি লাকি”, কেউ বলল, “কী ভাল রে তোর মম ড্যাড”, এসব শুনতে শুনতেই তিতাসের মনের ভিতর থেকে কেউ যেন বলে উঠল, ‘সত্যিই কী আমি লাকি?’ যাকগে, বেশি ভাবতে চায় না আর ও |
হঠাৎ ফোনে একটা এসএমএস ঢুকলো বাবার | যাক, বাবার মনে পড়েছে তবে | “হ্যাপি বার্থডে তিতাস, এনজয়”, বাবার ম্যাসেজটা পড়ে নিজের মনেই হেসে উঠল তিতাস |
বন্ধুরা সবাই তিতাসকে কেক কাটতে নিয়ে গেল | কেক কাটা হলো, খাওয়া হলো, পার্টি জমে উঠল, রাত বাড়তে লাগল | একটা ড্রিংক নিয়ে তিতাস ব্যালকনিতে দাঁড়াল | এখান থেকে তিলোত্তমা কলকাতাকে কত সুন্দর, মায়াময়ী লাগছে | চারিদিকে শুধু আলোর বিন্দু, যেন আলোর মালা, আর আকাশটা অন্ধকার | ড্রিংক করতে করতে ভাবল,”ঠিক ওর মতো, বাইরে থেকে কত সুন্দর ভাবে সবাই, কিন্তু আসলে কত একা |
হঠাৎ ভাবনায় ছেদ পড়ল | রাহুল এসে পাশে দাঁড়িয়েছে, “কিরে, এখানে একা দাঁড়িয়ে?”
“না জাস্ট একটু একাকিত্বকে উপভোগ করছি |”- তিতাস |
“এনে, ড্রিঙ্কটা নে |”-রাহুল |
“আরে আমার আছে |”-তিতাস |
“আচ্ছা ওটা শেষ হলে এটা নিস |”- রাহুল |
গল্প শুরু হলো রাহুলের সাথে | তিতাস এবছরই কলেজে ভর্তি হয়েছে, রাহুলের সাথে ওর কলেজেই আলাপ |
রাহুল বলল,”ইউ আর লুকিং গর্জিয়াস, স্পেশালি এই ডায়মন্ড সেটটা তোকে পেয়ে আরও সুন্দর হয়ে গেছে |
তিতাস হেসে উঠল,”ফ্লার্ট করছিস?”
“আরে না, সত্যি “- রাহুল |
****************
তিতাস মনে হয় একটু বেশিই ড্রিংক করে ফেলেছে, চোখটা ভাল করে তুলতেই পারছে না | রাহুল তিতাসের খোলা অগোছালো চুল মুখের উপর থেকে সরিয়ে দিচ্ছে, তিতাসের মন্দ লাগছে না | হঠাৎ রাহুল ওর উন্মুক্ত পিঠে হাত রাখল,খুব কাছে ওরা দুজন………… তারপর তিতাসের আর কিছু মনে নেই |
*****************
সকাল হতে তিতাসের ঘুম ভাঙল, মাথাটা খুব ধরে আছে | দেখল ওর বন্ধুর ফ্ল্যাটেই রয়েছে, এটা শালিনীর ফ্ল্যাট, যেখানে পার্টি ছিল | তিতাস তাড়াতাড়ি উঠতে গিয়েই দেখল ওর পোশাক অবিন্যস্ত | কিন্তু তিতাসের তো কিছুই মনে পড়ছে না | তাড়াতাড়ি উঠে ফ্রেশ হয়ে মানদা দিদুকে ফোন করল যেন চিন্তা না করে, মানদা দিদুর অজস্র মিসড কল | এই একটা মানুষই মনে হয় তিতাসকে নিয়ে টেনশন করে | ফ্রেশ হয়ে তিতাস গাড়ি ছোটাল বাড়ির দিকে | বাড়ি ফিরেই মানদা দিদুর কাছে বেশ ঝাড় খেল, শেষে গালে হামি দিয়ে শান্ত করল পাগলী বুড়িটাকে |
“খেতে দাও দিদু খিদে পেয়েছে “, বলে সোফায় গা এলিয়ে মোবাইলটা চেক করছিলো তিতাস, কালকের স্ন্যাপগুলো খুব সুন্দর এসেছে, ইস কেন যে অত ড্রিংক করল তিতাস | হঠাৎ একটা ফটো ঢুকলো তিতাসের ফোনে | রাহুলের মেসেজ, “এঞ্জয়েড এ লট” ক্যাপশন দিয়ে একটা ছবি, যেটা দেখে তিতাসের হার্ট প্রায় বেরিয়ে এল | তিতাসের নগ্ন ছবি, রাহুল একের পর এক সেন্ড করেই চলেছে |
“ওহ মাই গড !”, রাহুলকে ফোন করল তিতাস | ফোনে রাহুল রীতিমতো থ্রেট করতে লাগল, এই সব ফটো আপলোড করে দেবে নেট-এ যদি না ও রাহুলের কথা শোনে | এসব কথা কাকে বলবে তিতাস? টেনশনে দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে তিতাসের | রাহুল এক ঘন্টার মধ্যে ওর সাথে দেখা করতে বলেছে, আর বলেছে বাড়িতে বলতে যে ও বন্ধুর বাড়ি যাচ্ছে | তিতাসের মাথা কাজ করছে না, লোককে মুখ দেখাবে কি করে ও? আর কি বলতে চায় রাহুল? রাহুল কি টাকার জন্য এসব করছে? শেষ পর্যন্ত তিতাস বাধ্য হলো রাহুলের সাথে দেখা করতে |
একটি পুরনো বাড়ির পরিত্যক্ত গ্যারেজের কাছে ডাকার মানে কী? এখানে আসা তিতাসের একদম উচিত হয়নি, ও বেরিয়ে যাবে ভাবতে ভাবতেই রাহুল ওর হাতটা পিছন থেকে চেপে ধরল |
“এসব কী হচ্ছে রাহুল? কী চাইটা কী তোমার? কত টাকা চাই যে এসব করতে হচ্ছে তোমায়?” -তিতাস |
“টাকা তো চাইই, সাথে তোমার আর যা কিছু আছে, সবই চাই বেবি |”- রাহুল |
“মানে? মতলবটা কী তোর জানোয়ার?”, চেঁচিয়ে উঠল তিতাস |
রাহুল ওর মুখ বন্ধ করিয়ে ওর উপর চড়াও হলো | তিতাস নিজেকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলো |ওর নিজের বোকামোর জন্যই ওর আজ এই পরিণতি | ওর আজ একা আসা উচিত হয়নি |
শত চেষ্টা করেও ও রাহুলের সাথে গায়ের জোরে পেরে ওঠেনি | হঠাৎ-ই ওর শরীরে সূচ দিয়ে কিছু ইঞ্জেক্ট করলো রাহুল, চোখটা ধোঁয়াশায় ভরে যেতে লাগল……. জ্ঞান হারালো তিতাস |
জ্ঞান যখন ফিরল, তখন তিতাস বুঝল ও এখনও ওই পোড়ো গ্যারেজেই আছে, পাশেই ব্যাগটা পড়ে, তাতে টাকা যা ছিল উধাও | রাহুল নেই, এই সুযোগ, কিন্তু পালতে গিয়ে দেখল ওর পা আটকানো একটা শিকল দিয়ে | যাতে ও পালাতে না পারে তার ব্যবস্থা করে গেছে রাহুল | চিৎকার করে গলা শুকিয়ে গেল কিন্তু কারও কানে তিতাসের আর্তনাদ পৌঁছল না |
রাহুল ফিরে এসে তিতাসের গায়ে আরো কিছু একটা ইঞ্জেক্ট করল, আবার সেই একইরকম ধোঁয়াশা চোখে | না রাহুল ওর উপর চড়াও হয়নি | কতদিন বা কতক্ষন এভাবে কেটেছে জানে না তিতাস | এরপরদিন নিজেকে শৃঙ্খলমুক্ত পেয়ে কোনোক্রমে ওখান থেকে পালায় তিতাস |
রাহুল ওকে ধরলোই বা কেন, ছাড়লোই বা কেন? এবার ও পুলিশকে জানাবেই | কিন্তু কী বলবে ও পুলিশকে? রাহুল তো ওকে রেপ করেনি | তিতাস ওর শরীরে একটা অস্বস্তি বোধ করতে লাগল | আর রাহুল যদি সত্যিই আপলোড করে দেয়, তখন আর কাউকে মুখ দেখতে পারবে না ও | আর কাকেই বা বলবে এসব তিতাস, ওর পাশে ওকে বোঝার মতো যে কেউ নেই এখন, মা বাবাও ফেরেনি |
******************
নাহ, পুলিশকে জানাতে পারল না তিতাস যে ওকে রাহুল ব্ল্যাকমেল করে নিজের কার্যসিদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে | তিতাসের শরীরে বারংবার ড্র্যাগ ইঞ্জেক্ট করার জন্য তিতাস এখন না চাইলেও রাহুলের কাছে ছুটে যায়, নিজের শরীর ও টাকা দুটোই লুটিয়ে বাড়ি ফেরে |
তিতাসের বাবা মা কিছুতেই বুঝতে পারছে না, ও এরকম হয়ে যাচ্ছে কেন? হাসি খুশি তিতাসের চোখের কোণে কালি | চুপচাপ বসে থাকে, হঠাৎ হঠাৎ চমকে ওঠে, কাউকে কিছু বলে না |
******************
( কিছুদিন পর )
সাউথ সিটির আবাসনে একটি সুইসাইড হয়েছে, ইন্সপেক্টর ভাদুড়ির হাতে কেসটা পড়েছে | এই ফ্ল্যাটেরই অষ্টাদশী কন্যা তিতাস লাহিড়ীর সুইসাইড কেস | তিতাসের শোকস্তব্ধ পরিবারকে ডেকে পাঠিয়েছে মিঃ ভাদুড়ী |
“তিতাসের একটি সুইসাইড নোট পাওয়া গেছে |”, ভাদুড়ী বললেন তিতাসের মা বাবাকে লক্ষ করে |
জিজ্ঞাসু, শোকবিহ্বল দৃষ্টিতে ইন্সপেক্টরের দিকে তাকাল তিতাসের মা বাবা |
মিঃ ভাদুড়ী বলতে শুরু করলেন,-“আর পারছি না আমি, আয়নায় নিজের চোখে চোখ রাখতে পারছি না, নিজেকে ঘেন্না হয়, এভাবে বাঁচা সম্ভব? আমি একটু একটুকরো শেষ হয়ে যাচ্ছি, শত চেষ্টা করেও নিজেকে আটকাতে পারছি না | বারবার ওই জানোয়ারটা আমায় ভোগ করছে, এভাবে বাঁচা যায় না | কিন্তু কাকে এসব বলব? কারওর যে আমার কথা শোনার সময় নেই, না মার না বাবার | দিনরাত থ্রেট, ব্ল্যাকমেল, আর নিতে পারছি না আমি | ড্রাগ ছাড়া বাঁচা অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে, নিজেকে একটু একটু করে শেষ হতে দেখছি | তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, পুরোটাই শেষ করার | দিদু, মা, বাবা, আই লাভ ইউ | মা, বাবা আমি তোমাদের খুব মিস করি, করবও, ক্ষমা করো | -তোমাদের তিতাস |” চিঠিটা পড়ে থামলেন ইন্সপেক্টর ভাদুড়ী |
তিতাসের বাবা বলে উঠলেন,”এই জানোয়ারটাকে অ্যারেস্ট করুন ইন্সপেক্টর, আমি ওর চরমতম শাস্তি চাই |”
“জানোয়ারটাকে আমরা অলরেডি অ্যারেস্ট করেছি মিঃ লাহিড়ী | কিন্তু আমায় একটা কথা বলুন, তিতাস কার দোষে আজ চলে গেল? ও যদি আজ ওর মা বাবাকে কাছে পেত তাহলে কী আজ এটা হতো? আপনাদের এই মুহূর্তে এসব কথা বলা আমার উচিত নয়, কিন্তু তাও বলছি, কারণ না বলে পারছি না | মেয়েটাকে যদি একটু সময় দিতেন, একটু যদি কম ছুটতেন টাকার পিছনে, একটু যদি আশপাশটা দেখতেন তাহলে হয়তো মেয়েটার কষ্টটা চোখে পড়ত | কিন্তু আপনাদের সময় কোথায় ? আপনাদের তো সময় নেই | আপনাদের তো দৌড়াতে হবে | চারপাশে তাকানোর ফুরসতই নেই | এখন কী করবেন অত টাকা ? আর এটা তো মা বাবা উভয়ের দায়িত্ত্ব, নিজেদের পার্সোনাল আর প্রফেশনাল লাইফকে যদি এইটুকু ব্যালেন্সই না করতে পারেন, তাহলে সন্তানের জন্ম দেন কেন আপনারা? অকালে আর কত তিতাস ঝরে যাবে বলুন তো আপনাদের মতন মা বাবার দায়বদ্ধতার অভাবে ? এক বাড়িতে থেকেও একেকজন একেক গ্রহের মানুষ | আজ তিতাস আপনাদের প্রথম প্রায়োরিটি হলে আমায় এই কথাগুলো বলতে হতো না | আসুন এবার আপনারা |”
রাহুল সমাজের চোখে অপরাধী, কিন্তু মিঃ ও মিসেস লাহিড়ীও দায় এড়াতে পারেন না | আরও তিতাস ঝরে যাওয়ার আগে এবার বোধ হয় সজাগ হওয়ার সময় এসে গেছে |