রদ্যি খবর

“তোকে কতবার আর বলব পুপু, আজ অন্তত দস্যিপনাটা একটু কমা। দেখছিস তো বাড়িতে লোকজন আসবে আজ।” মেয়ে পুপুকে আবার একবার খানিক ধমকে দিলো রাধিকা, বিক্রমপুরের রায়চৌধুরী বাড়ির বড় বৌ।

-“কী করব? আমার খুব ক্ষিদে পেয়েছে তো। ও মা, একটু নাড়ু খাবো?”

-“খুব বকব কিন্তু এবার, পুপু। আজ বাড়িতে লক্ষীপুজো, আগে পুজো হবে, তারপর সব খাওয়া। ছোট ঠাকমা জানতে পারলে কিন্তু রক্ষে থাকবে না। নেহাত এই সাতসকালে কেউ উপরে ওঠে না তাই। 

-“কিন্তু, প্রতিবার তো দেখি পুজো হওয়ার আগেই, বাবা, কাকা, দাদু সবাই-ই খেয়ে নেয়। আগেরবার মনে আছে আমার তালের বড়া খেতে ইচ্ছে করছিল একটা নিয়েছিলাম বলে ঠাকমা কত জোরে পায়ে খুন্তি দিয়ে মেরেছিল। কিন্তু সেবারও তো বাবারা আগেই খেয়েছিলো , কই তখন তো ঠাকমা…”

-“পুপু, তুই বড্ড পেকেছিস কিন্তু। জানবি না, বুঝবি না, শুধু বকবক। ছেলেরা খেতে পারে, মেয়েরা নয়, কতবার তো শিখিয়েছি। নাও, এইবেলা একটু পড়ে নাও। ওবেলা আবার পুজো, লেখাপড়া করবে না তখন তো পোয়াবারো।

-“না, আজ পড়তে ইচ্ছে করছে না। তুমি আজ সারাদিন ধরে ঠাকুরের যে ভোগ রাঁধো, দেখব তোমার পাশে বসে, খাবো না প্রমিস। কিন্তু বসে বসে দেখতে খুব মজা লাগে। আমি তো এখন লুচি বেলতেও শিখে গেছি, তাই না মা?”

-“ওরে আমার পাকা বুড়ি রে। খুব পেকেছো তুমি।” বলেই ছ’বছরের পুপুর কচি গালে স্নেহের চুম্বন এঁকে দিলো রাধিকা।

সাবেকী, ঐতিহ্যশীল এই রায়চৌধুরী বাড়িতে রাধিকার আগমন সাত বছর আগে। বড় বৌ হিসেবে এই বাড়িতে পা রাখার পর থেকেই বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছিল এই বাড়ির নিয়ম-কানুন, আইন-শৃঙ্খলা, আচার-বিচার। রাধিকার বেশ মনে পড়ে, যখন বিয়ে হয়, রাধিকার মাত্র ১৮ বছর তখন, রান্নায় হাতেখড়ি হয়েছে সবে। ওর শাশুড়ীমা বৌভাতের দিন সারা বাড়ির লোকজন, সমস্ত নিমন্ত্রিত সবার জন্য সকালের বৌভাত অনুষ্ঠানের পায়েস রাঁধার ভার ওর ওপর দিয়ে দিয়েছিল। খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিল ও সেদিন, চোখ ফেটে জলও আসছিল, কিন্তু কীভাবে যেন সব হয়ে গেছিল, করে ফেলেছিল সবটা। ঐ কাঁচা হাতেও কেউ যেন পাশে থেকে উদ্ধার করে দিয়েছিল সবটা।

সেই শুরু, তারপর থেকে এতগুলো বছর নিয়ম কানুন-এর বেড়াজাল, আর নারী হওয়ার ‘অপরাধে’ অনেক কিছুই মানিয়ে নিয়েছে রাধিকা, এখন দিব্যি চলছে।

রাধিকার শাশুড়ীমা মারা গেছেন বহুকাল। শাশুড়ীমার ছবিটুকুই দেখেছে শুধু। এর বেশী এই সংসারে মানুষটার কোন স্মৃতি রাখার প্রয়োজন বোধ করেনি কেউ। রাধিকার স্বামী রণজয় রায়চৌধুরীই একমাত্র পুত্রসন্তান, রতিকান্ত রায়চৌধুরী আর ননীবালা রায়চৌধুরীর। পুত্রসন্তানের আশাতেই রাধিকার নয়জন ননদের পর রণজয়-এর জন্ম। রণজয়-ই তাদের মধ্যে ছোট, বাকী সব ননদই বিবাহিত, নিজ নিজ শ্বশুরবাড়িতে। রাধিকার শাশুড়ীমার মৃত্যু রণজয়-এর জন্মের সময়ই, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে। এসবই শোনা কথা, রাধিকার দিদিশাশুড়ির কাছে। তিনিও পরলোক গমন করেছেন বছর পাঁচেক প্রায়।

তারপরই রাধিকার শ্বশুরমশাই আবার বিয়ে করেন। সন্ধ্যারাণী রায়চৌধুরী, রাধিকার সৎ শাশুড়ীমা, এনাকেই পুপু ছোটঠাকমা বলে। এনার একটিই পুত্রসন্তান। ভাগ্যিস, প্রথমেই পুত্রসন্তান, নয়তো এনারও যে কী অবস্থা হতো। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তারপর আর কোন সন্তান নেই। সুতরাং, রণজয়ই বাড়ির বড় ছেলে আর সঞ্জয় ছোট।

রাধিকা পুপুর চুলটা আঁচড়ে দিচ্ছিল। পুপুকে নিয়েই বেঁচে থাকা, নয়তো, এই বাড়িতে মন খুলে শ্বাস নিয়ে বাঁচতে পারে নাকি কেউ? তলপেটে রণজয়-এর আঘাতটা এখনও যেন সারছেই না। পুপুর পর আর কোন সন্তান রাধিকা এখনই চায় না। কিন্তু পুপু যে কন্যাসন্তান, ছেলে না দিলে চলবে কেন? এই নিয়েই রোজ রণজয়-এর অত্যাচার সহ্য করতে হচ্ছে রাধিকাকে।

যতই স্ত্রী হোক, রাধিকার ইচ্ছের বিরুদ্ধে ওকে জোর করার অধিকার তো রণজয়-এরও নেই, তা নিয়ে বলতে গিয়েই অত্যাচার আরো বেড়েছে বই কমেনি, পুরস্কার স্বরূপ তলপেটে কিল ঘুসি। এইসব কিছু দেখার পর রাধিকা সত্যিই চায় না ওর কোলে আর কোন পুত্রসন্তান আসুক। সেও যদি এই বাড়ির বাকী পুরুষ সদস্যের মতোই তৈরী হয়। যদি মানুষই না করতে পারে তাকে? কী দরকার বোঝা বাড়িয়ে, তার থেকে…

-“ও মা, মা, দেখবে এস, কী সুন্দর পাখিটা, কী মিষ্টি ডাকছে।”

পুপুর কচি গলায় টনক নড়লো রাধিকার।

-“পুপু, কাকার ঘর থেকে আঁকার খাতাটা কিন্তু এখনও আনলি না। আঁকার আন্টি চলে আসবে। তখন এ ঘর, ও ঘর, খুঁজে বেড়াবি। খালি ফাঁকিবাজি।”

বাড়িটার চারপাশে ছড়িয়ে বেশ বড় বাগানটা। অজস্র নাম না জানা পাখি ভোরবেলা এসে ভিড় জমায়। বাগানের মালিভাই এই বছর কী সুন্দর সুন্দর বাহারি ফুলগুলো লাগিয়েছে। দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। জুঁই, বেল-এর গন্ধে এ দিকের বারান্দাটা যেন ভরে থাকে। বারান্দাটায় এসে দাঁড়ালে যেন সব মনখারাপ, তিক্ততা একনিমেষে হাওয়া। বারান্দার কাছে এসে মন ভোরে সুবাস নিলো রাধিকা। ভোরের পরিবেশে এই বারান্দা, সামনের ফোয়ারাটা, আর অজস্র ফুলে ঢাকা এই বাগান সবকিছুতে যেন একটা প্রশান্তি জড়িয়ে থাকে। ভোরের নরম আলোয় যেন আলসেমি তখনও খানিক জড়িয়ে। বারান্দার সামনেই পূব আকাশের লাল আভা ছড়িয়ে চারদিকে। অন্ধকারের পর আবার একটা নতুন শুরু।

মায়ের কথাটা শুনেই পুপুর মুখের মিষ্টি, নিষ্পাপ হাসিটা যেন কোথায় মিলিয়ে গেল। যেন চোখে মুখে আবার একটা আতঙ্ক ফিরে এসেছে। খানিক জড়োসড়ো হয়ে বারান্দার থামটার কাছে গিয়ে দাঁড়াল পুপু। মেয়ের এরকম ব্যবহারের কারণ খুঁজতে গিয়ে বুঝতে পারল রাধিকা আসল ব্যাপারটা। আর কিছু না বলে মেয়েকে বুকে আগলে নিল ও। আবার ভয় পেয়ে গেছে মেয়েটা।

ছোট্টবেলা থেকেই যদি বাড়ির ছেলেদেরই এই শিক্ষা দিতে মা বাবা যদি অপারগ হয়, যে মেয়েরা শুধুই ভোগ্যপণ্য নয়, মানুষও হয়,আসলে তারাও মানুষই হয়, তাহলে কী আজ এই অবস্থা দাঁড়াতো? কাল যখন পুপুর কাছে সবটা শুনল, আর নিজের মাথা ঠান্ডা রাখতে পারেনি রাধিকা| রাগে, দুঃখে, অপমানে, যন্ত্রণায় – থরথর করে কাঁপছিল ও সবটা শুনে। ঐটুকু একটা দুধের শিশুকেও হেনস্থা করতে ছাড়েনি, এত খিদে তোর? সৎ শাশুড়ি আর সৎ দেওরকে গিয়ে সঙ্গে সঙ্গে বলেছে রাধিকা। কিন্তু কী লাভ হলো?

“ছেলেদের ওরকম একটু আধটু হতেই পারে, ওটা নিয়ে এত ঝামেলা করার কী আছে?”

সব শুনে সন্ধ্যারাণী দেবী আবারও নিজের ছেলেকেই আড়াল করেছেন। ছেলে অন্যায় করে মুখ লুকোলো মায়ের আঁচলে, মা লুকোতে সাহায্যও করলেন। শ্বশুরমশাইও শুনে চুপই রইলেন। রণজয় বাড়ি ফিরলে সব শোনার পর, মেয়েকে সামলে রাখার নিধান দিলেন অবশেষে, বাবা আর শ্বশুর। এদের থেকে আর কীই বা আশা করার থাকতে পারে? ঐটুকু শিশুকে যদি মানুষ না ভাবে, রাগে দুঃখে নিজের মেয়েটাকে আগলে নিয়ে কেঁদে ফেলল আবার রাধিকা। কাল সবটা দেখে আর চুপ থাকার কোন মানে হয় বলে মনে হয় না। এখান থেকে কারও সাহায্য পাবে না ও, তা ও ভাল করেই জানে। নিজেই ঐ পাষন্ডটার বিরুদ্ধে…যদিও হিসেবে মতো দেখতে গেলে এবাড়ির প্রতিটা পুরুষই…

এটা বলার পরই তো কাল…

“মা, নীচে এত ভিড় কেন হঠাৎ? কী হয়েছে গো?”

মেয়ের কথায় ঘড়ির দিকে তাকালো রাধিকা, এই রে এই করতে করতে বেলা হয়ে গেল। নিশ্চয় দুধওয়ালা, কাগজওয়ালা নীচের মেনগেটটা খোলা না পেয়ে ভিড় করেছে। রোজ ভোরে রাধিকাকেই গেটটা খুলতে হয়। কানাইদা, মিনুদি সব নাকে তেল দিয়ে গুমবে।

বলতে বলতেই মেন্ গেটের দিকে তাকিয়েই দেখল, বেশ কয়েকজন ভিড় জমিয়েছে গেটে। বুকের ভিতরটা ছ্যাঁৎ করে উঠল রাধিকার। ওর কানে যা এসেছে কাল, তা কী তবে সত্যি? এই জন্যই কী এরা এই বাড়ির সামনে ভিড় জমিয়েছে?

সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে কথা বলার সময় সন্ধ্যারাণী ছেলের কুকর্ম শুনে গলা নীচু তো দূরে থাকে, একইভাবে গলা উঁচু করে আবার বলেন, “বাইরে হরিহর চক্কোত্তির মেয়ের সাথে কী হয়েছে জানো তো? খুব তো বলেছিল, সঞ্জয়ের নামে নাকি মামলা ঠুকবে। সাহস কত? একবার সয়েছিল, হলো না। কী দরকার ছিল বলার এসব? আবার হলো তো? একবার নয়, দু’বার। নে মর এবার, ওর মা বাবা ভাই আর মুখ দেখাতে পারবে ওর লজ্জায়? এই জন্য বলি মেয়ে হয়েছো মেয়ের মতোই থাকো, বেশি বাড়তে যেও না,আমার ছেলের আর কী? ওর আজ নয় কাল সব মিটে গেলে ঠিকই…”

গা-টা ঘিনঘিন করছিল রাধিকার। আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনি ওখানে। বাড়ি না নরক বুঝতে পারছিল না ও। বেরিয়ে গেছিল ঘর থেকে।

তার মানে গ্রামের লোকজনই হয়তো এসছে, মেয়েটার কী কিছু হয়ে গেল? কারো তো কিছু বলার ক্ষমতাও নেই, ইচ্ছেও নেই, ছিঃ ছিঃ ছিঃ। কীভাবে ওদের সামনে দাঁড়াবে ও মাথা তুলে?

ঘরে ঘরে ছেলেদের যেখানে ছোট থেকে এই শিক্ষায় শিক্ষিত করা হয়, মেয়ে মানেই লালসার বস্তু, ভোগের বস্তু, সন্তান উৎপাদনের যন্ত্র, নিজের মন মর্জির হিসাব রাখার রোবট মাত্র, সেই ঘরের ছেলের কাছে নির্যাতনটা কোন অপরাধ তো হতেই পারে না। কারণ, তার মা বাবাই তাকে অপরাধ কাকে বলে, সেই শিক্ষাটাই দেননি। তাই পাপের ঘড়া পূর্ণ হলেও নিজের সম্মান, জীবন, দিয়ে সেই পাপের প্রায়শ্চিত্ত নারীকেই করতে হচ্ছে। কন্যাসন্তান জন্মালেও যেমন আতঙ্ক, তেমনি তো পুত্রসন্তান জন্মালেও তাই। একজন মানুষ হয়ে বাঁচার সুযোগ পায় না, আর একজন মানুষ হয়ে বাঁচার সুযোগ চায় না। বহুকাল থেকে তো এই-ই হয়ে আসছে। 

বাগানের রাস্তাটা ধরে হাঁটতে হাঁটতে পিছন থেকে শুনল কন্ঠটা, অপরিচিত হয়েও যেন কত পরিচিত সেই গলার স্বর, “এই মেয়ে?”

গলাটা শুনে পিছন ফিরে তাকাল রাধিকা, এ কে? কোথায় যেন দেখেছে একে? এখন কিছুতেই মনে পড়ছে না কেন? পরনে লালপাড় সাদা শাড়ী, মাথায় খোঁপা, খুব পরিচিত, খুব, কিন্তু কিছুতেই মনে করতে পারছে না।

-“চল।” মহিলা কাছে এসে বললেন রাধিকাকে।

-“মানে? কে আপনি? আর এখানে এভাবে?”

-“এবাড়ির পাট চুকেছে তোর, এখনও যাবি না? মেয়েটা কই?”

সব গুলিয়ে যাচ্ছে, সব। মাথাটা কেমন ঝিমঝিম করছে রাধিকার। হিমশীতল হাত দিয়ে রাধিকার হাত শক্ত করে ধরে আছেন মহিলা।

-“আরে, এ তো– এ তো রণজয়-এর মা… মানে?”

ভয়ে পেয়ে গেছে রাধিকা, কী হচ্ছে ওর সাথে, কিছুই তো বুঝতে পারছে না ও।

এই মানুষটাকে তো শুধু ছবিতেই দেখেছিল, কিন্তু ছবিতে দেখেও বরাবর খুব কাছের লাগে যেন, কেমন যেন একটা মা মা অনুভূতি, সত্যিকারের মা — কিন্তু, এসব কি… মাঠের উপর বাড়ির দালানের শেষে চোখ যেতে যেন চোখটা ঠেলে বেরিয়ে আসছে ওর।

দালানের সামনে রাখা সাদা কাপড়ে ঢাকা ছোট্ট শবদেহটা – পুপুর শবদেহ, একেই ছোট্ট মেয়েটা, পুড়ে যেন আরও ছোট হয়ে গেছে। পুপু, রাধিকার বাঁচার একমাত্র অবলম্বন। চিৎকার করে কেঁদে উঠল রাধিকা, কিন্তু কেউ শুনল না ওর চিৎকার,কারণ পাশেই লাল বেনারসীতে মোড়া আরেকটা শবদেহ – রাধিকার।

“দ্যাখ মেয়ে, সবাই ভিড় জমাচ্ছে, কত কাঁদছে। তোর স্বামী, আমার স্বামী সবাই কাঁদছে, কত রঙ্গই না জানে, কে বলবে কাল এই-ই তোর শাড়ীতে আগুন দিয়েছিল? আমার বেলাতেও নাকি কান্না কেঁদেছিল জানিস? অতটা ধকল আর নিতে পারব না জানতো, তাও।।।”

সত্যিই তো, এই জন্যই কী এতক্ষণ কিছু মনে পড়ছিলো না? ও যে আর নেই, ওর পুপুও যে আর নেই, কালকের অশান্তির পর রাধিকা বড় ঝামেলা বাঁধাতে পারে, এই ভয়ে আগুন ধরিয়ে দিল ওর গায়ে, কত সহজে, পুড়িয়ে শেষ করে দিল সব, ওর বাচ্চাটা বাঁচাতে গেছিল মাকে, আগুনের লেলিহান শিখা থেকে বাঁচাতে পারেনি,পুড়িয়ে মারলো, নিশ্চয় বাইরে গল্প রটবে সিলিন্ডার বাস্ট… 

তা একদিক দিয়ে ভালোই হয়েছে, পুপু বেঁচে থাকলেও তো মরতোই, আজ নয় কাল মরত। ওর নরম শরীরটাকে ছিঁড়ে খুবলে খেয়ে ফেলে দিত কোন নদী নালাতে, এর বেশী আর ভবিতব্যই বা কী?

ছোট্ট পুপুর হাত ধরে রাধিকা এগোল মহাশূন্যের পথে।

এবার অন্তত শান্তি, আর অন্তত কোন কষ্ট পেতে হবে না ওদেরকে। এইবাড়ির সন্তান উৎপাদনের যন্ত্র স্বরূপ ওর নিজের শাশুড়িমাও তো প্রাণ দিয়েছিলেন এভাবেই, সেটা অত্যাচারের থেকে কম কী? তিন প্রজন্ম আজ একসাথে, একটু একটু করে মিলিয়ে যাচ্ছে, বিলীন হয়ে যাচ্ছে আকাশের মাঝে। পড়ে রইল লক্ষীর ফাঁকা সিংহাসন, আজ যে লক্ষীপুজো ছিল।কাগজওয়ালা কাগজ দিয়ে গেল, আজকের শিরোনাম – “আবার পিছোল ধর্ষকদের ফাঁসি।”

তুলিকা রায়ের কলমে দুটি ভিন্ন স্বাদের সেরা উপন্যাস একসাথে মাত্র ৯৯/- টাকায় -

Share with

এরকম আরো কিছু গল্প

মুক্তি

বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে হয়ে গেল, আকাশ তখন থেকে ঠায় বসেই রয়েছে ঘাটে। এখন বাঁধানো ঘাট থেকে করিডোর হয়ে বাবা বিশ্বনাথের মন্দিরে পুজো দেওয়া অনেকটা সহজ

Read More »

বন্ধু হবি চল

বাক্সপেটরা নিয়ে স্টেশনেই বসে ছিল নয়না, বৃষ্টি পড়েই চলেছে, মুষলধারায়। বাবা বলল আরেকটু অপেক্ষা করতে, এত বৃষ্টিতে তো ছাতাও হার মানবে, আর বেরিয়ে রাস্তাও অজানা

Read More »

টিফিনবাক্স

প্রতিবারের মতন এই বছর ও সমস্ত সরঞ্জাম গুছিয়ে বেরোনোর জন্য ব্যস্ত অমিত, অন্তত সন্ধ্যার মধ্যে বেরোতে না পারলে খুব মুশকিল। পুজোর দিকটা কতদূর কি হলো

Read More »

ক্লিক

।।১।। -“মালিনী, কালকের মিটিংটা কখন ফিক্স করেছ? -“ম্যাম, সকাল ১১টা।” -“ওকে, কনফার্মেশন পেয়ে গেছ?” -“ইয়েস ম্যাম।” -“ওকে গুড। আর।।। এক মিনিট।।।” টেবিল থেকে ফোনটা তুলে

Read More »

শিক্ষা

।।১।। দাপুটে, বদরাগী, মেজাজি এই সব কটা বিশেষণই বেশ ভালো যায় মিসেস বোসের সাথে। রেণুকা বোস আর অমরনাথ বোস সানফ্লাওয়ার এপার্টমেন্টে ১২০০ স্কোয়ারফিটের ফ্ল্যাট 2c

Read More »

বিদায়

।। ১।। রীতিমত জোর করেই নন্দিনীকে পাহাড়ে নিয়ে এলো সঙ্গীতারা। আসার ইচ্ছে তো ছিল না ওর একদমই, শরীর সাথ দিলেও মনটা কোনোভাবেই সাথ দিচ্ছে না।

Read More »

Share with