ভ্যালেনটাইনস ডে স্পেশাল

#১

প্রেমের শুরু – কলেজস্ট্রিট

মনে পড়ে সেই ট্রামলাইন, সেই ইউনিভার্সিটি? মনে পড়ে বই-এর রসায়নের সঙ্গে জমে ওঠা আমাদের রসায়নটাও? আচ্ছা সেই রোলের দোকানটা আছে এখনও? নাকী সবটাই বদলে গেছে?এই ট্রামলাইনের সামনেই প্রথম তোর হাত ধরেছিলাম।

জীবনের চলার পথে আজ ঝুলপিতে রুপোলী আভা। বাকিটুকু খরচ হওয়ার আগে চল যাই, সেই কফিহাউস, সেই পুঁটিরাম, চলনা হাঁটি হাত ধরে আরও একবার।।।



#২

অন্তহীন

শুভ: আমায় না দিয়েই চকলেটটা খেয়ে নিয়েছিস? আমিও তোকে রসগোল্লার ভাগ দেব না।

তুলি: তোর তো ৪টে আছে, ১টা দিতেই হবে।।।

।।। ব্যস আবার ঝগড়া শুরু।।।

(২৫বছর পর)

তুলি: আমার ছেলে আগে মা বলবে।

শুভ: না, বাবা বলবে, আমি শেখাবো।

।।। কিছু প্রেম অন্তহীন, তাই হয়তো কিছু ঝগড়াও।।।



#৩

বৃষ্টি

-“আবার ছাতাটা আনতে ভুলে গেছিস? আচ্ছা আয় আমার সাথে।”

মেয়েটা “না, না” করতে করতে ছেলেটার পাশে গিয়ে গা ঘেঁষে দাঁড়ালো।

মেয়েটার ব্যাগের ভেতর লুকোনো ছাতাটা তখন আনন্দে যাচ্ছে আর ছেলেটা মনে মনে বারবার দেবতাদের ডাকছে, “প্লিজ ঠাকুর, এই বৃষ্টি যেন কখনো না থামে।।।”



#৪

ছোট্ট

-“সাবধানে যাবি আর পৌঁছে জানাবি।

ছোট্ট একটা মেসেজ, কিন্তু মিশে থাকা ভালোবাসার গভীরতা?

অসীম।।।



#৫

সাথে আছি

প্রেমিকার কপালে একটা ছোট্ট চুমু এঁকে দিয়ে তার সুন্দর মুখটা দেখছিল প্রেমিক। প্রেমিকা মিষ্টি হেসে তার দিকেই তাকিয়ে আছে – অপলক, মায়াবী, গভীর দৃষ্টি।।।

ছবিটা পাশের টেবিলে রেখে চোখ বন্ধ করল রাজদীপ, আবার দেখা হলো তার রাধিকার সাথে।

রাধিকার মৃত্যুর ৬বছর পরও তারা আজও এভাবেই একসাথে।।।



#৬

গল্প

মেয়েটা রোজ সকালে ছেলেটাকে চা নিয়ে এসে ঘুম থেকে তোলে আর ছেলেটা মেয়েটার গালে একটা মিষ্টি চুমু খেয়ে দিনটা শুরু করে। ওদের প্রেমটা একদম পারফেক্ট, কোনদিন ঝগড়া হয়নি, কেউ কাওকে কখনো খারাপ কিছু বলেনি।।।

।।।অবাস্তব গল্পটা পড়তে পড়তে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি বুঝতেই পারিনি।



#৭

ভীতু প্রেম

-“তুই বেরিয়ে যা আমার জীবন থেকে, আমি চাই না থাকতে তোর সাথে।” মেয়েটা চিৎকার করে বলল।

-“তোর পিছনে ওটা কী? টিকটিক???”

সমস্ত রাগ গলে গিয়ে যেন ভয়ের রূপ ধরলো। ছেলেটা আবার পেল তাকে তার বাহুডোরে, আবার হলো প্রেম, বিষাদ ভুলিয়ে।



#৮

ভালবাসি

পাড়ায় নতুন এক দম্পতি এসেছেন, তা নিয়ে কৌতূহলের সীমা নেই মানুষের। নতুন বিয়ে, কিন্তু ছেলেটা নাকী বোবা।

“এখন কত কী-ই না হচ্ছে? দু’দিন বাদেই ডিভোর্স হবে দেখে নিও,” পাড়ার বিজ্ঞ জনের মতামত।

(বেশ কয়েক বছর পর)

পাড়ায় কত সম্পর্ক ভাঙল, ডিভোর্সও হলো, এই দম্পতি কিন্তু সেই একই আছেন। ভালোবেসে সাথে থাকার জন্য শব্দ ব্যবহার কি খুব দরকার? শব্দ তো বাকী সম্পর্কেও ছিল, এখানে শব্দ না থেকেও মানুষ দুটোর ভালবাসা আজও কত জীবন্ত।



#৯

প্রেম ২০২০

৫মিনিট হয়ে গেল, এখনো রিপ্লাই করলো না, আশ্চর্য ছেলে তো। মনে মনে ভারী রাগ হলো।

পাশেই ঠাকুমা বসেছিলেন, হয়তো আমার মুখের ভাব দেখে কিছু বুঝলেন। কাঁধের ওপর হাতটা রেখে বলল, “তোর ঠাকুরদার চিঠি আস্তে ১মাস লাগত।”

মুচকি হাসলাম, একটু লজ্জাও পেলাম, ভাবলাম – “ইসস আমরা কী অধৈর্য !”



#১০

শীতের উষ্ণতা

‘শীতটা বোধহয় ঘুরে পড়ল আবার,’ ভাবতে ভাবতেই কলেজ থেকে বেরোচ্ছিল সোহিনী।হঠাৎ সৌম্যদা তার জ্যাকেটটা সোহিনীর দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল, “এই না এটা পরে বাড়ি যা, এই শীতে সন্ধ্যেবেলা সোয়েটার জ্যাকেট ছাড়া বাড়ি ফিরলে কাল আর কলেজ আসতে হবে না।”

সেই ঘটনাটার পর থেকে সৌম্যদা এই প্রথম কথা বলল। বড় জ্যাকেটের হাত দুটোয় নিজের ছোট হাত দুটো গলিয়ে জ্যাকেটটা গায়ে নিতেই মনে হলো যেন তার সৌম্যই তাকে জড়িয়ে ধরেছে। খানিক্ষন ওখানেই দাঁড়িয়ে ছিল সোহিনী।

বাড়ি ফিরতে ফিরতে মনে হলো, ‘তবে কী এই শীতই উষ্ণতা দিল তাদের শীতল হয়ে যাওয়া সম্পর্ককে?’



#১১

প্রতিশ্রুতি

ভিক্তোরিয়ার মাঠে বসে বড় গিফট প্যাকটা কোলে নিয়ে জিজ্ঞেস করল রিয়া, “কী আছে এ’তে? এত বড়!”

“নিজেই খুলে দ্যাখ না,” স্বভাবসিদ্ধ মুচকি হাসি নিয়ে বলল রোহিত।

রিয়া প্যাকেটটা খুলে দেখে, একটা “লাভ ইউ রিয়া” লেখা কার্ড আর গোলাপী-লাল রঙা টেডি। খুশিতে জ্বলজ্বল করে ওঠে রিয়ার চোখ, জড়িয়ে ধরে রোহিতকে।

-“কখনো ছেড়ে যাবি না তো?”

-“কখনো না।।।”রোহিতের সাথে ডিভোর্সের ৫বছর পর দোকানে সাজানো গোলাপী-লাল টেডিটা দেখে অতীতে হারিয়ে গেছিল রিয়া, দোকানদারের “মে আই হেল্প ইউ” শুনে বর্তমানে ফিরল।

চোখের কোণে জল, মুখে টুকরো হাসি নিয়ে রিয়া বলল, “এটা একটা প্যাক করে দিন।।।”



#১২

ঝগড়ার পর

-“আমি নিজেকে পাল্টে নেব, আর ঝগড়া করবো না রে।”

-“ধ্যুর পাগলী, আমি তো তোকেই ভালোবাসি, পাল্টে গেলে কি তুই তুই থাকবি?”

হয়তো তাই নিজের ভালোবাসার সাথে নিজেকে মানিয়ে নেওয়াই প্রেম।



তুলিকা রায়ের কলমে দুটি ভিন্ন স্বাদের সেরা উপন্যাস একসাথে মাত্র ৯৯/- টাকায় -

Share with

এরকম আরো কিছু গল্প

Share with